এরপরই নিরাপত্তা বাহিনীকে ঐ চিঠির ব্যাপারে অবহিত করা হয়। উড়ো চিঠির উৎস খুঁজতে গিয়ে মুম্বাই পুলিশের সন্দেহের তালিকার প্রথমেই আসে লরেন্স বিষ্ণই গ্যাং। এরইমধ্যে দিল্লি পুলিশ জেরা করেছে বিষ্ণইকে। যদিও সালমান খানকে বেনামি হুমকি চিঠির সঙ্গে নিজের অথবা নিজের গ্যাং’র কোনোরকম যোগসাজশের কথা অস্বীকার করেছে বিষ্ণই। দীর্ঘদিন ধরে তিহার জেলে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণই।
এদিকে, বলিউড সুপারস্টার সালমান খানকে হত্যার হুমকি এবং হত্যাচেষ্টা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে ভারতের টাইমস নেটওয়ার্ক। তারা বলছে, চলমান সিধু মুসওয়ালা হত্যাকাণ্ড তদন্তকালেই বলিউড ভাইজানকে হত্যা প্রচেষ্টার আঁচ পাওয়া গিয়েছিলো।
আকস্মিকভাবেই এই ঘটনার কথা জানতে পারেন সিধু মুসওয়ালা হত্যাকাণ্ড তদন্তকারী একজন পুলিশ কর্মকর্তা । ঐ পুলিশ কর্মাকর্তার ভাষ্যমতে, সালমান খানকে হত্যা করার জন্য একজন বন্দুকধারীকে নিয়োগ করা হয়েছিলো, কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান এই বলিউড ব্যাচেলর।
এই কর্মকর্তার দেয়া তথ্য বলছে, বিষ্ণই একজন শার্পশুটারকে নিয়োগ করেছিলো সালমান খানকে হত্যার জন্য। এজন্য, ঐ শার্পশুটারকে হকিস্টিক রাখার কেসে একটি কম বোরের আগ্নেয়াস্ত্র দেয়া হয় । সালমানের বাড়ির বাইরে অবস্থান নিতে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছিলো তাকে। কিন্তু ভাগ্যক্রমে রক্ষা পান বলিউড সুপাস্টার সালমান খান।
সালমানের গতিবিধি যাচাই করে লরেন্স বিষ্ণয় আর তার সহযোগীরা জানতে পারেন, তিনি সকালে সাইক্লিং করেন। সে সময়ই তাকে গুলি করে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সেই দিন সকালে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় একজন পুলিশ সদস্যকে সহযোগী দেয়া হয় সালমান খানকে। যার ফলে অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি।
এদিকে, এ হত্যার হুমকির ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয়দের নামে এফআইআর করেছে বান্দ্রা পুলিশ। এছাড়া, সালমানকে বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনীতে রাখা হয়েছে। অবশ্য, শুধু সালমান খানকেই নয়, বাড়ানো হয়েছে তার গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের চারপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এখন পর্যন্ত ২০০টিরও বেশি সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করেছে মুম্বাই পুলিশ। সালমান মামলার তদন্তে কাজ করছে, ক্রাইম ব্রাঞ্চ ও স্থানীয় পুলিশসহ মোট ১০টি দল ।
দীর্ঘদিনই ধরে পাঞ্জাবি গায়কের হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণইয়ের টার্গেটে আছেন সালমান খান। কারণ, কৃষ্ণসার হরিণকে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের কাছে পবিত্র বলে গণ্য করা হয়। এমনকি কৃষ্ণসার হরিণের রক্ষাকর্তা বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের অংশই হচ্ছেন গ্যাংস্টার লরেন্স।
১৯৯৮ সাল থেকেই সালমান খানের ওপর অভিযোগ ঐ কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার। যোধপুরে শুটিং চলাকালে দুটি কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এরপর থেকেই বিষ্ণই সম্প্রদায়ের চোখে ভিলেন হয়ে আছেন সালমান খান। এর আগেও বেশ কয়েকবার সালমান খানকে শার্প শুটার দিয়ে হত্যার ছক কষেছিল লরেন্স বিষ্ণই। এমনকি, ২০১৮ সালে লরেন্স গ্যাংস্টার বাহিনী প্রকাশ্যে জানিয়েছিলো , ‘ভারতের যোধপুরেই সালমান খানকে আমরা হত্যা করবো।’