গতকাল ২০ নভেম্বর আলো ঝলমলে এক মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধন হয়ে গেল কাতার বিশ্বকাপ ২০২২। বিশ্বকাপের আয়োজনে কাতার ব্যায় করছে ২২০ বিলিয়ন ডলার যা সর্বকালের সেরা ব্যায়বহুল আয়োজনের তকমা পেয়েছে ইতিমধ্যে। কাতার এই বিশ্বকাপ আয়োজন যে বিপুল পরিমান অর্থ খরচ করছে তার অনেকটাই লেগেছে চোখ ধাঁধানো সব স্টেডিয়াম তৈরির কাজে।
চলুন আজ জেনে আসি কাতার বিশ্বকাপের চোখ কপালে ওঠার মতো ৮টি আশ্চর্যজনক স্টেডিয়াম সম্পর্কেঃ-
১।। আল-ওয়াকরা স্টেডিয়ামঃ এক সময় কাতারের সাধারন মানুষের আয়ের প্রধান উৎস ছিল ঝিনুক থেকে মুক্তা আহরণ এবং মাছ শিকার। তাই ঝিনুকের আদলে বানানো হয় এই স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। বিশ্বকাপ শেষে স্টেডিয়ামটির ৪০ হাজার আসন থেকে ২০ হাজার আসন যেকোন অনুন্নত ফুটবল দেশকে উপহার দেয়া হবে, যাতে করে অনুন্নত দেশটি ফুটবল উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারে।
২।। স্টেডিয়াম 974: বিশ্বের প্রথম পরিবহন যোগ্য স্টেডিয়াম এটি, যা বিশ্বকাপ শেষ হলে পুরো স্টেডিয়ামটি কোন অনুন্নত দেশকে উপহার হিসেবে দিবে কাতার। ৯৭৪ টি কন্টিনার দিয়ে তৈরী এই স্টেডিয়ামটি তাই এর নামকরণ করা হয় “স্টেডিয়াম 974″। চাইলে শুধু কন্টেইনার হিসেবেও ব্যাবহার করা যাবে।
৩।। লুসাইল স্টেডিয়ামঃ স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হয়েছে কাতারের ঐতিহ্যবাহী খেজুরের বাটির আদলে এবং চারপাশে করা হয়েছে ইসলামিক কারুকার্য। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্টেডিয়ামটির ছাদ খোলা এবং বন্ধ করা যাবে। স্টেডিয়ামটির ভিতরে প্রবেশের জন্য রয়েছে কয়েকটি ব্রিজ এবং রাজধানী দোহা থেকে এই স্টেডিয়ামে যাওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি আস্ত মেট্রো রেল। বিশ্বকাপ শেষে এর আসন সংখ্যা কমিয়ে ৪০ হাজার করা হবে এবং বাকি আসন আসনসংখ্যা কোন অনুন্নত দেশকে উপহার হিসেবে দেওয়া হবে।
৪।। আল-বাইত স্টেডিয়ামঃ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই স্টেডিয়ামটির ভিতরে আছে ফাইভ স্টার আবাসিক হোটেল, চাইলে হোটেলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে খেলা দেখা যাবে। এই স্টেডিয়ামের এরিয়া এতো বড় যে, এখানে রাখা যাবে কয়েক হাজার গাড়ি, ৭০০টি বাস এবং ওয়াটার ট্যাক্সি।
৫।। আল-থুমামা স্টেডিয়ামঃ এই স্টেডিয়ামটি মুসলিমদের টুপির আদলে ডিজাইন করা হয়েছে। স্টেডিয়ামটির উপরের নান্দনিক ভিউ এবং চারপাশের ইসলামিক ডিজাইন স্টেডিয়ামটিকে মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে।
৬।। এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামঃ কাতারের অল-রাইয়ান এডুকেশন সিটি, যেখানে রয়েছে কাতারের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়। সেইরকম কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্তুলে করা হয়েছে এই স্টেডিয়ামটি। বিশ্বের সবচেয়ে টেকসই এবং পরিবেশ বান্ধব স্টেডিয়াম এটি। কাতার বিশ্বকাপ শেষে এই স্টেডিয়ামেরও আসন সংখ্যা কমিয়ে কোন অনুন্নত দেশকে উপহার দেয়া হবে এবং স্টেডিয়ামটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন খেলার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
৭।।আল-রাইয়ান স্টেডিয়ামঃ কাতারের আল-রাইয়ান স্টেডিয়ামটি করা হয়েছে কাতারে মরুভূমির আদলের সাথে মিল রেখে। বিশ্বকাপ আয়োজনের কারনে ৪১হাজার ধারণ ক্ষমতার জন্য ২০১৬ সালে এই স্টেডিয়ামটি পূর্ণ নির্মাণ করা হয়। যা বিশ্বকাপ শেষে আসন সংখ্যা কমিয়ে ২০হাজারে করা হবে। বাকি আসন সংখ্যা কোন অনুন্নত ফুটবল প্রেমি দেশকে ফুটবল উন্নয়নের জন্য উপহার হিসেবে দিবে কাতার সরকার।
৮।।খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামঃ কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থিত এই অত্যাধুনিক স্টেডিয়ামটি কাতারের জাতীয় স্টেডিয়াম। ১৯৭৩ সালে এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়। বহুমুখী ব্যাবহারে লক্ষ্য নিয়ে ও ৪৫ হাজার আসন সংখ্যা বাড়িয়ে কাতার ফিফা বিশ্বকাপের জন্য এটি পূর্ণ নির্মাণ করা হয়