মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে মানুষের মৃতদেহ থেকে জৈব সার তৈরি করার প্রক্রিয়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির দেয়া এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর শনিবার নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্রেটিক গভর্নর ক্যাথি হোচুল অনুমোদন দেওয়ার পর নিউইয়র্ক যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ অঙ্গরাজ্য হিসেবে পদ্ধতিটির অনুমোদ পেল। উল্লেখ্য ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াশিংটন প্রথম এই পদ্ধতির অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর কলোরাডো, ওরেগন, ভার্মন্ট ও ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যেেও এ পদ্ধতির অনুমোদন দেওয়া হয়।
এই প্রক্রিয়ায় একটি নিদিষ্ট পদ্ধতিতে মানুষের মরদেহকে মাটিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব এবং এটিকে যথেষ্ট পরিবেশবান্ধব হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাটিতে বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে মৃত দেহ থেকে জৈব সার তৈরির প্রক্রিয়াটি সম্পাদন করা হয়।জৈব সার বানাতে প্রথমে আবদ্ধ জায়গায় মরদেহকে রাখা হয়।পরে সেখানে মৃতদেহের সাথে কাঠের গুঁড়া, বিশেষ ধরনের লতাপাতা ও খড় ঘাসের মতো উপাদানসমুহ রাখা হয়। এরপর ধীরে ধীরে এগুলোর মধ্যে পচন শুরু হয়।এর মধ্যে জীবাণুমুক্ত করার জন্য সেখানে তাপ প্রয়োগ করা হয়। প্রায় এক মাস ধরে এভাবে রাখার পর স্বাভাবিকভাবেই মরদেহ জৈব সারে পরিণত হয়।এই মৃতদেহ থেকে তৈরি জৈব সার মাটিতে মিশিয়ে ফুলগাছ, সবজি চাষ ও বৃক্ষায়নে ব্যবহার করা যায়।
আরও পড়ুনঃ পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন, প্যারেড পরিদর্শনে রাজারবাগে প্রধানমন্ত্রী
সহজ উপায়ে প্রাকৃতিক জৈবপদ্ধতি হিসেবে এটিকে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে দেখা গেছে, আবদ্ধ অবস্থায় থাকলে কয়েক সপ্তাহ পর মরদেহ পচে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান রিকম্পোজ এর উপকারিতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলে,এ জৈব সার ব্যবহার করে প্রায় এক টন কার্বন সংরক্ষণ করা সম্ভব। উল্লেখ্য জলবায়ু পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রাখে এই কার্বন ডাই–অক্সাইডের নিঃসরণ। এর প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, যা গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব হিসেবে পরিচিত।
মানব জৈব সার ব্যবহার সমর্থকেরা এই প্রক্রিয়াকে যথেষ্ট পরিবেশবান্ধব হিসেবে বিবেচনা করেছেন। এতে করে সীমিত জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
তবে বলাই বাহুল্য এই পদ্ধতি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। বিশেষ করে নিউইয়র্কের রক্ষণশীল ক্যাথলিক চার্চগুলো থেকে এর বিরোধিতা করে বলা হয়েছে, মানবদেহকে গৃহস্থালির বর্জ্য হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়।এছাড়া জৈব সারে রূপান্তরিত করার খরচ নিয়েও সমালোচনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ইউরোপের দেশ সুইডেনেও মানব জৈব সার আইনিভাবে বৈধ।