টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, ৯২ এর পুনঃমঞ্চায়ন করতে পারলো না পাকিস্তান

হৃদয় ভাঙার কষ্টকে সঙ্গী করে মেলবোর্ন থেকে খালি হাতে ফিরতে হল পাকিস্তানকে।ইতিহাসের পুনঃমঞ্চায়ন করতে পারলেন না বাবর আজমের পাকবাহিনি।মাঠ একই,প্রতিপক্ষও একই  কিন্তু জয়ের গল্পটা একই হল না। ৯২ বিশ্বকাপে ইমরান খান যা করে দেখালেন ২২ এসে আর তা করে দেখাতে পারলেন না বাবর আজম।

ফাইনালে টান টান উত্তেজনার এ লড়াইয়ে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল ইংল্যান্ড। ২০১০ সালে তারা প্রথমবার এই ফরম্যাটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

দিনের শুরুতে  টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে  নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৭ রান তোলে পাকিস্তান। বাবর-রিজওয়ান ওপেনিং জুটিতে করেন ২৯ রান। ১৪ বলে ১৫ রান করা রিজওয়ানকে প্রথমে প্যাভিলিয়নে ফেরান স্যাম কারান। পঞ্চম ওভারে এই জুটি ভাঙে রিজওয়ান বোল্ড হবার পর। পাওয়ারপ্লেতে আসে  মাত্র ৩৯ রান। এরপর মোহাম্মদ হারিসকে বেন স্টোকসের তালুবন্দি করেন আদিল রশিদ। হারিস ১২ বলে ৮ রান করেন। রশিদের দ্বিতীয় শিকার হন বাবর আজম। ২৮ বলে ৩২ রান করা পাকিস্তান অধিনায়ককে তিনি কট অ্যান্ড বোল্ড করে দেন।  রান খরার এইদিনে ব্যর্থ হয়েছেন ইফতিখারও। ৬ বলে কোনো রান না করেই বেন স্টোকসের বলে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন তিনি।

এরপর শান মাসুদ আর শাদাব খান জুটি গড়ে পাকিস্তানকে এগিয়ে নিতে থাকেন। ১৪.৩ ওভারে তাদের স্কোর তিন অংক ছাড়ায়। এরপর নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান। ৩৬ রানের জুটি ভাঙে স্যাম কারেনের বলে ৩৮ রান করা শান মাসুদের বিদায়ে। ক্রিস জর্ডানের বলে ক্রিস ওকসের তালুবন্দি হয়ে থামে শাদাব খানের ১৪ বলে ২০ রানের ইনিংস। এরপর কারেনের তৃতীয় শিকার মোহাম্মদ নওয়াজ (৫)। শেষ ওভারে ওয়াসিমকে (৪) ফেরান জর্ডান। ৮ উইকেটে টেনেটুনে ১৩৭ রান তোলে পাকিস্তান। ১২ রানে ৩ উইকেট নেন স্যাম কারেন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আদিল রশিদ আর ক্রিস জর্ডান। অল-রাউন্ডার বেন স্টোকস নিয়েছেন একটি।

খেলার ২য় ভাগে রান তাড়ায় নেমে দলীয় ৭ রানেই  অ্যালেক্স হেলসকে হারায় ইংল্যান্ড। প্রথম ওভারেই শাহিন আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে যান হেলস (১)। চতুর্থ ওভারে ফিল সল্টকে (৯) হারায় ইংল্যান্ড। তাদের স্কোরবোর্ডে রান তখন মাত্র ৩২।৬ষ্ঠ ওভারে ইংল্যান্ডকে বড় ধাক্কা দেন হারিস রউফ। তার বলে কিপার রিজওয়ানের গ্লাভসে ধরা পড়েন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার।

শেষ হয় তার ১৬ বলে ২৬ রানের ইনিংস। তিন উইকেট হারিয়ে পাওয়ারপ্লেতে ইংল্যান্ড ৪৫ রান তোলে। হ্যারি ব্রুকের সঙ্গে সঙ্গে বেন এর জুটিও জমে উঠলেও রান আসছিল ধীরগতিতে। অবশেষে ৪১ বলে ৩৯ রানের এই জুটি ভাঙে হ্যারি ব্রুকের বিদায়ে। শাদাব খানের শিকার হয়ে ফিরেন ২৩ বলে ২০ রান করা ব্রুক। শেষ ৫ ওভারে দরকার ছিল ৪১ রানের। এদিকে ১৬তম ওভার করতে এসে ইনজুরিতে মাঠ ছাড়েন পাক বোলার শাহিন আফ্রিদি।

ওভারের বাকি ৫ বল করেন ইফতিখার আর পাকিস্তানের দুর্ভাগ্যর শুরু এখান থেকেই । ওই ওভারেই চার-ছক্কার মেরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন বেন স্টোকস। পরের ওভারে ওয়াসিমের বাজে বোলিংএ রানের খাতাইয় বাকি রান খুব সহজে যোগ কওরে নেয় ইংল্যান্ড। যদিও ওয়াসিমের  ১৯তম ওভারের বোল্ড হয়ে যান ১২ বলে ১৯ করা মঈন আলী। ভাঙে ৩৫ বলে ৪৮ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি। কিন্তু ততক্ষণে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় ইংলান্দ।এর মধ্যে ওয়াসিম এর ওভারের চতুর্থ বলেই বাউন্ডারি মেরে নিজের ফিফটি পূরণ করেন বোন স্টোকস। দুই দলের স্কোর সমান করে ফেলেন। শেষ বলে স্টোকসের শটে এক ওভার হাতে রেখেই ৫ উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।